খুলনা মহানগরীর ট্যাংক রোডে গৃহবধূ শিউলি বেগম হত্যাকাণ্ডের এখনও মামলা দায়ের হয়নি। উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া পৌনে ৭ লাখ টাকা। ঘটনার পর থেকে নিহত শিউলি বেগমের ছেলে রিয়াদ আত্মগোপনে থাকায় পুলিশের সন্দেহের তীর এখন তার দিকে। তবে হত্যাকাণ্ডে সন্দেহের তীর তার ছেলে রিয়াদের দিকে। এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর ট্যাংক রোডের রবিউল ইসলামের বাড়ির নীচতলা থেকে গৃহবধূ শিউলী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, “শিউলী বেগমের ঘরে রাখা প্রায় পৌনে ৭ লাখ টাকার সন্ধান মেলাতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। এ হত্যাকাণ্ডে নিহতের ছেলে রিয়াদকে পরিবারের পক্ষ থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “ঘরে রাখা পুতো দিয়ে মাথার তালুর বাম পাশে আঘাত এবং পরবর্তীতে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বালিশ দিয়ে চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।”
নিহতের মেয়ে কেয়া জানায়, “আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে দু’বছর আগে পরিবার ছেড়ে সৌদি পাড়ি জমায় শিউলী বেগম। সেখানকার অর্জিত টাকা তিনি ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসেন। দেশে ফিরে প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ৫-৬ দিন পূর্বে প্রায় পৌনে ৭ লাখ টাকা বাড়িতে নিয়ে আসেন।”
সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে তার মায়ের সন্ধান পাচ্ছিলেন না কেয়া। মায়ের খোঁজে ডুমুরিয়ায় নানা বাড়িতে চলে যায়। কিন্তু সেখানে না পেয়ে বাড়িতে ফিরে এসে পুনরায় মায়ের সন্ধান করতে থাকে। এক সময় মায়ের পায়ের স্যান্ডেল ঘরের সামনে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে বাড়ির মালিক ও পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে তালা কেটে ভিতরে প্রবেশ করে খাটের ওপর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে তারা পুলিশে খবর দেয়।
কেয়া আরও বলেন, “আমার ভাই রিয়াদ পেশায় একজন টাইলস মিস্ত্রি ছিল। প্রতিদিন ভোর ৬ টার দিকে কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু বুধবার ঘটনার দিন সকাল ৭ টা ৫৫ মিনিটের দিকে বের হয়। এ সময় তার কাছে একটি ব্যাগ এবং কালো রংয়ের একটি শার্ট পরা ছিল। যেটি বাড়ির মালিকের সিসি ফুটেজে ধরা পড়েছে। তার আচরণ সন্দেহজনক। তাছাড়া ব্যাংক থেকে আনা পৌনে ৭ লাখ টাকা খোয়া এবং ঘরের সবকিছু এলোমেলো ছিল। ভাই রিয়াদ ঘরের বাইরে থেকে বের হওয়ার পর ওই ঘরের ভেতরে কেউ প্রবেশ বা সেখান থেকে বাইরে বের হয়নি।” তাই ছোট ভাই রিয়াদই মাকে খুন করেছে বলে তার দাবি।
কেএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সুদর্শন কুমার রায় বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে রিয়াদকে দোষারোপ করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই আমরা তাকে পেয়ে যাব এবং ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।”
খুলনা গেজেট/এনএম

